কৃষ্ণচূড়ার প্রতীকী রক্তাক্ত কফিন কাঁধে ঢাবিতে মিছিল

কৃষ্ণচূড়ার প্রতীকী রক্তাক্ত কফিন কাঁধে ঢাবিতে মিছিল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলা ভবনের দক্ষিণ পূর্ব কোণে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী কৃষ্ণচূড়া গাছটি কেটে ফেলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে প্রতীকী রক্তমাখা কফিন কাঁধে নিয়ে মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। কেটে ফেলা গাছের পাশে একটি নতুন কৃষ্ণচূড়ার চারাও রোপণ করেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে ‘কৃষ্ণচূড়া কৃষ্ণচূড়া, বিপজ্জনক কৃষ্ণচূড়া’ স্লোগানে মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ। মিছিলটি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে কলাভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈম বলেন, যখন প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ওড়ানো হয়েছিল, তখন ঠিক ২০০ কদম দূর থেকে এই গাছটি পতাকা ওড়ানো প্রত্যক্ষ করেছিল। কিন্তু ঝুঁকির কথা বলে গাছটি কেটে ফেলা হলো। শিক্ষার্থীরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে যখন অক্সিজেনের অভাব বোধ করছে, তখনই বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগ মুহূর্তে এভাবে গাছ কাটা হচ্ছে। এই গাছগুলো কাটা মানেই ইতিহাসকে কেটে ফেলা। কিন্তু আমরা এই ইতিহাসকে বহন করতে চাই।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী রাকিব হোসেন বলেন, এই গাছটি দীর্ঘদিন ধরে ছিল। সেখানে তার নিজস্ব একটা বাস্তুতন্ত্রের সৃষ্টি হয়েছিল। সেই বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস করা হল। এর বদলে যদি আরও ১০০টি গাছও লাগানো হয়, তারপরও এই ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব না। তবুও আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই যে, এই গাছের পরিবর্তে আরও ১০০টি গাছ লাগাতে হবে।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা মিম বলেন, আমরা নির্বিচারে গাছ হত্যার প্রতিবাদ জানাই। আমরা চাই এভাবে যেন আর কোনো গাছ হত্যাকাণ্ডের শিকার না হয়। প্রশাসন এই গাছের কাঠগুলোকে বিক্রি করতে পারবে না। এই কাঠগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য দান করতে হবে। ক্যাম্পাসের গাছ ক্যাম্পাসে থাকবে।

সমাবেশ থেকে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চারটি দাবি জানান। দাবিগুলো হচ্ছে- ভবিষ্যতে অপরিকল্পিতভাবে যেকোনো গাছ কাটা থেকে প্রশাসনকে বিরত থাকতে হবে; কেটে ফেলা গাছটির পরিবর্তে নতুন করে অন্তত একশো গাছ ক্যাম্পাসে রোপণ করতে হবে; কেটে ফেলা গাছটির কাঠ বিক্রি করা যাবে না, এটি চারুকলা অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাজের প্রয়োজনে ব্যবহৃত হবে; শিক্ষার্থীদের রোপণ করা চারা গাছটি সংরক্ষণ করতে হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন